Explanation
ছাত্ররা বিশ্ব কিভাবে শাসন করবে? বিশ্ব পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা হলো ভবিষ্যতের নায়ক, যারা সমাজের প্রতিটি স্তরে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বর্তমান সময়ে ছাত্রছাত্রীরা শুধুমাত্র একাডেমিক শিক্ষা গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের নানাবিধ পরিবর্তনের প্রক্রিয়াতেও সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই আর্টিকেলে, আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব কিভাবে ছাত্ররা বিশ্ব শাসন করবে এবং তাদের এই ক্ষমতার পরিধি কীভাবে বিস্তৃত হতে পারে।
১. শিক্ষা ও জ্ঞান: শাসনের মূল ভিত্তি
ছাত্রদের বিশ্ব শাসনের প্রথম পদক্ষেপ হলো সঠিক শিক্ষা ও জ্ঞানের অধিকারী হওয়া। শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে এবং জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে। শিক্ষার্থীরা যদি যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়, তবে তারা সমাজের প্রতিটি স্তরে যোগ্য নেতৃত্ব দিতে পারবে। তারা সমগ্র পৃথিবীর পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্ররা কেবল একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলির সমাধানও করতে শিখবে। তারা সমস্যাগুলির সমাধান করার জন্য নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে এবং সমাজের উন্নতির জন্য নতুন নীতিমালা গড়ে তুলবে।
২. নেতৃত্বের গুণাবলী: সঠিক নেতৃত্বের বিকাশ
শিক্ষার্থীরা যদি সঠিক নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ করতে পারে, তবে তারা বিশ্ব শাসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে। নেতৃত্বের গুণাবলী ছাত্রদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, সততা, এবং দায়িত্বশীলতা তৈরি করে। এই গুণগুলি একজন নেতাকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দেয়।
নেতৃত্বের জন্য শুধু ব্যক্তিগত গুণাবলী নয়, বরং দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে কাজ করার দক্ষতা এবং অন্যদের মধ্যে নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। এভাবে তারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে।
৩. প্রযুক্তির ব্যবহার: নতুন সম্ভাবনার উন্মোচন
বর্তমান যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার ছাত্রদের ক্ষমতায়নে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা বিশ্বকে নতুনভাবে দেখতে এবং শাসন করতে শিখছে। ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ছাত্ররা দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করতে, বিশ্লেষণ করতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রযুক্তি ছাত্রদের বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ এবং জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে, এবং যৌথভাবে নতুন প্রকল্পে কাজ করতে পারে। প্রযুক্তির সাহায্যে তারা বিশ্বকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে এবং নতুনভাবে শাসন করতে পারবে।
৪. সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব: সক্রিয় অংশগ্রহণ
ছাত্রদের মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। তারা যদি সমাজের সমস্যাগুলি সম্পর্কে সচেতন হয় এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, তবে তারা সমাজের পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
ছাত্রদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে সামাজিক বিজ্ঞানের উপর জোর দেওয়া উচিত। তাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে শেখাতে হবে। এর মাধ্যমে তারা সমাজের সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য নতুন উপায় উদ্ভাবন করতে পারবে।
৫. নৈতিকতা ও মূল্যবোধ: সঠিক শাসনের দিশারী
একজন নেতা যখন নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়, তখন সে সঠিকভাবে শাসন করতে পারে। ছাত্রদের মধ্যে নৈতিকতার বিকাশ ঘটাতে হবে, যাতে তারা বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে সঠিক দিশা পেতে পারে।
নীতিগতভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য নৈতিকতা একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্ররা সঠিক এবং ভুলের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখবে এবং সমাজের জন্য কল্যাণকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
৬. পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে প্রস্তুত করা
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে টেকসই উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্ররা যদি পরিবেশের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হয় এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে, তবে তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরি করতে পারবে।
পরিবেশ সচেতনতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে তোলার জন্য স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে পরিবেশ বিজ্ঞান শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। তারা যদি পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সচেতন হয়, তবে তারা বিশ্বকে সঠিকভাবে শাসন করতে পারবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুরক্ষিত পৃথিবী তৈরি করতে পারবে।
৭. সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন: নতুন বিশ্ব গড়ার প্রেরণা
ছাত্রদের মধ্যে সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনের ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা নতুন বিশ্ব গড়ার প্রেরণা পায়। সৃজনশীলতা ছাত্রদের মধ্যে নতুন চিন্তার বিকাশ ঘটায় এবং উদ্ভাবন তাদের সেই চিন্তাকে বাস্তবায়িত করার শক্তি দেয়।
সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে তোলার জন্য তাদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার এবং নতুন ধারণা তৈরি করার সুযোগ দিতে হবে। এভাবে তারা বিশ্বকে নতুনভাবে শাসন করতে পারবে এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে আসতে পারবে।
৮. বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ: বিশ্ব নাগরিক হিসেবে প্রস্তুতি
ছাত্রদের মধ্যে বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তারা বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে। বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ ছাত্রদের মধ্যে বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান, পারস্পরিক সহযোগিতা, এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানের জন্য দলবদ্ধভাবে কাজ করার ইচ্ছা গড়ে তোলে।
বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেওয়া উচিত। তারা যদি বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস, এবং সমাজ সম্পর্কে জানতে পারে, তবে তারা বিশ্বকে শাসনের জন্য উপযুক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রস্তুত হতে পারবে।
৯. চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা: সাফল্যের পথ তৈরি
বিশ্ব শাসনের পথে ছাত্রদের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিকূলতা আসতে পারে। তবে তারা যদি সঠিকভাবে প্রস্তুত হয় এবং সংকল্পবদ্ধ হয়, তবে তারা এই চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করে সাফল্যের পথ তৈরি করতে পারবে।
ছাত্রদের মধ্যে সংকল্প এবং স্থিতিশীলতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও স্থির থাকতে পারে এবং সফল হতে পারে। তারা যদি দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলে, তবে তারা বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারবে।
১০. উদারতা ও সহানুভূতি: মানবিক শাসনের ভিত্তি
ছাত্রদের মধ্যে উদারতা ও সহানুভূতির গুণাবলী গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মানবিকতা ছাড়া শাসন কার্যকর হতে পারে না। একজন নেতা যখন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করে, তখন সে সমাজের প্রত্যেক মানুষের কল্যাণের দিকে নজর দিতে সক্ষম হয়।
উদারতা ও সহানুভূতির গুণাবলী ছাত্রদের মধ্যে গড়ে তুলতে পারলে, তারা সমাজের সব স্তরের মানুষের সমস্যাগুলি বোঝার ক্ষমতা অর্জন করবে। তারা সকলের প্রতি সমানভাবে দৃষ্টিপাত করতে শিখবে এবং অসহায়দের সাহায্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।
এই গুণাবলীর সাহায্যে তারা এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে পারবে, যেখানে সব মানুষই ন্যায় বিচার ও সমান অধিকার ভোগ করতে পারবে। এভাবে ছাত্ররা বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করতে পারবে এবং একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
১১. সমন্বয় ও সহযোগিতা: বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য অপরিহার্য
বিশ্ব শাসনে সফল হওয়ার জন্য ছাত্রদের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতার গুণাবলী থাকা অত্যন্ত জরুরি। একজন নেতার সফলতা নির্ভর করে তার দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতার উপর। যদি শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে শিখে, তবে তারা জটিল সমস্যাগুলির সমাধান করতে এবং নতুন লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে।
সমন্বয় ও সহযোগিতার গুণাবলী ছাত্রদের মধ্যে গড়ে তুলতে হলে, তাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এভাবে তারা দলবদ্ধভাবে কাজ করার গুরুত্ব এবং এর মাধ্যমে বিশ্ব শাসনে ভূমিকা রাখার পদ্ধতি শিখতে পারবে।
১২. সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা: বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা একটি অপরিহার্য গুণ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা গড়ে তোলা জরুরি, কারণ বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা অপরিহার্য।
ছাত্রদের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা গড়ে তোলার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ দিতে হবে। তারা যদি বিভিন্ন সংস্কৃতির মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে এবং তা সম্মান করে, তবে তারা বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে তারা বিশ্বকে শাসনের ক্ষেত্রে আরও দক্ষ এবং সংবেদনশীল নেতৃত্ব প্রদান করতে পারবে।
১৩. অর্থনৈতিক সচেতনতা: দারিদ্র্য বিমোচনের পথ
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সচেতনতা শিক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য। অর্থনৈতিক সমস্যা যেমন দারিদ্র্য, বৈষম্য, এবং বেকারত্ব, এগুলোকে সমাধান করার জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্থনৈতিক জ্ঞান থাকা জরুরি।
ছাত্রদের অর্থনৈতিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তাদের অর্থনীতি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করার সুযোগ দিতে হবে। অর্থনৈতিক জ্ঞান থাকলে তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে এবং দারিদ্র্য বিমোচনের পথ তৈরি করতে সক্ষম হবে।
অর্থনৈতিক সচেতনতা তাদেরকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি বুঝতে এবং সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে তারা সমাজের সকল মানুষের জন্য একটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ে তুলতে পারবে।
১৪. স্বাস্থ্য সচেতনতা: সুস্থ সমাজের জন্য
ছাত্রদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সুস্থতা ছাড়া সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জ্ঞান এবং সঠিক জীবনযাত্রার পদ্ধতি শেখানো জরুরি।
ছাত্রদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। তারা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয়, তবে তারা সমাজের অন্যান্য সদস্যদেরও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে সচেতন করতে সক্ষম হবে।
এর মাধ্যমে তারা একটি সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর সমাজ গড়ে তুলতে পারবে, যা বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
১৫. নারী নেতৃত্ব: সমান সুযোগের সুরক্ষা
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে নারী নেতৃত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছাত্রদের মধ্যে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি।
নারী নেতৃত্বের গুরুত্ব বোঝাতে ছাত্রদেরকে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই নারীর ক্ষমতায়নের শিক্ষা দেওয়া উচিত। নারীদেরকে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করার জন্য উৎসাহিত করা এবং তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া দরকার।
নারী নেতৃত্বের বিকাশের মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরে সমান সুযোগের সুরক্ষা সম্ভব হবে। এর ফলে ছাত্ররা সমাজে নারী নেতৃত্বকে উৎসাহিত করতে পারবে এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি সমতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
১৬. বিজ্ঞান ও গবেষণা: নতুন জ্ঞানের উন্মোচন
ছাত্রদের মধ্যে বিজ্ঞান ও গবেষণার আগ্রহ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিজ্ঞান এবং গবেষণার মাধ্যমেই নতুন জ্ঞানের উন্মোচন সম্ভব।
ছাত্রদের বিজ্ঞান ও গবেষণার প্রতি আগ্রহ গড়ে তুলতে তাদেরকে গবেষণা এবং উদ্ভাবনের সুযোগ দিতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে তারা নতুন প্রযুক্তি, চিকিৎসা, এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করতে সক্ষম হবে, যা সমাজের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
গবেষণার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বিশ্বকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখবে এবং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন উপায় উদ্ভাবন করতে পারবে। এর মাধ্যমে তারা বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
১৭. আইন ও বিচার: ন্যায়বিচারের জন্য
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে ছাত্রদের মধ্যে আইন ও বিচার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। একজন নেতা যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে, তখন সে সমাজের সকল সদস্যের জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়।
আইন ও বিচার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য ছাত্রদের আইন এবং বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করার সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে আইন ও বিচার সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় শিখতে হবে, যাতে তারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে পারে।
ছাত্ররা যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, তবে তারা একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে, যেখানে সব মানুষই সমান অধিকার ভোগ করতে পারবে।
১৮. পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষাদান: বিশ্ব শাসনের ধারাবাহিকতা
বিশ্ব শাসনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ছাত্রদের মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষাদানের গুরুত্ব বোঝানো জরুরি। শিক্ষাদানের মাধ্যমে তারা নতুন প্রজন্মকে সঠিক দিশা দেখাতে এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য প্রস্তুত করতে পারবে।
ছাত্ররা যদি নতুন প্রজন্মকে সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে সক্ষম হয়, তবে তারা সমাজের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে। এভাবে তারা বিশ্ব শাসনের জন্য প্রস্তুত নতুন নেতাদের তৈরি করতে পারবে।
ছাত্ররা বিশ্ব কিভাবে শাসন করবে?
এই আর্টিকেলে আমরা দেখেছি কিভাবে ছাত্ররা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ব শাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের মধ্যে শিক্ষা, নেতৃত্বের গুণাবলী, সামাজিক সচেতনতা, নৈতিকতা, প্রযুক্তি, এবং অন্যান্য গুণাবলী গড়ে তোলা হলে তারা একটি উন্নত এবং মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
ছাত্ররা হলো আগামী দিনের নেতা। তাদের সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারলে, তারা বিশ্বকে সঠিক দিশায় পরিচালিত করতে এবং একটি সমৃদ্ধ, ন্যায়ভিত্তিক, এবং সুরক্ষিত পৃথিবী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এভাবেই ছাত্ররা বিশ্ব শাসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
উপসংহার
বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক শিক্ষা, নেতৃত্বের গুণাবলী, প্রযুক্তির ব্যবহার, সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা, নৈতিকতা, পরিবেশ সচেতনতা, সৃজনশীলতা, এবং বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণের মাধ্যমে তারা বিশ্বকে শাসন করতে পারবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীই যদি এই গুণগুলি অর্জন করতে পারে, তবে তারা বিশ্বকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে শাসন করতে এবং একটি উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।