যখন কিছুই ভালো লাগে না তখন কি করা উচিৎ ?
Explanation
যখন কিছুই ভালো লাগে না তখন কি করা উচিত? জীবনে এমন সময় আসে যখন মনে হয় কিছুই ভালো লাগছে না। মন খারাপ, কোন কাজে ইচ্ছে হচ্ছে না, সবকিছুই অন্ধকার মনে হচ্ছে। এই অনুভূতিগুলো স্বাভাবিক, তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এই অবস্থায় আপনি যা করতে পারেন:
নিচের যে কোন একটি উপায়ে আপনি যখন কিছুই ভালো লাগে না তখন কি করা উচিৎ সেটি খুজে পাবেন ইনশাআল্লাহ।
নিজের অনুভূতিগুলোকে স্বীকার করুন:
প্রথমেই বুঝতে হবে যে আপনি খারাপ বোধ করছেন। আপনি নিজে আপনার জীবনের কোন অবস্থানে আছেন সেটা আপনার থেকে কেউ বেশী বলতে পারবে না। তাই নিজের অনুভূতিগুলোকে চেপে রাখার চেষ্টা করবেন না। কান্না আসলে কাঁদুন, রাগ হলে রাগ প্রকাশ করুন। অনুভূতিগুলোকে যে কোন উপায়ে প্রকাশ করলেই আপনি অনেকটা ফ্রী হয়ে যাবেন।
বিশ্বস্ত কারো সাথে কথা বলুন:
একজন বন্ধু, পরিবারের সদস্য, থেরাপিস্ট, যে কারো সাথে হোক না কেন, আপনার মনের কথা শেয়ার করুন। কথা বলা আপনার মনকে হালকা করতে সাহায্য করবে। যদিও এই দুনিয়ায় বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া খুবই মুশকিল। তবুও যাদের পাচ্ছেন তাদের অবহেলা করা উচিৎ নয়।
নিজের যত্ন নিন:
পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা – এই সবকিছুই আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। পৃথিবীতে নিজের যত্ন কেউ নিজে ছাড়া অন্য কেউই স্বার্থ ছাড়া নিবে না।
কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিন:
যদি কাজের চাপ বা অন্য কোন চিন্তা আপনাকে বিষণ্ণ করে ফেলে থাকে, তাহলে কিছুদিনের জন্য ছুটি নিন। পরিবেশ পরিবর্তন করে মনকে নতুন করে শুরু করার সুযোগ দিন। একটা টুর দিতে পারেন যা আপনার মনকে রিফ্রেশ করতে সাহায্য করবে।
ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন:
বড় লক্ষ্যগুলো আপনাকে হতাশ করতে পারে। তাই ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেগুলো অর্জন করার চেষ্টা করুন। প্রতিটি সাফল্য আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করবে।
বড় লক্ষ্য কিংবা লং টাইমের প্লান বা স্বপ্ন গুলো চিন্তা থেকে বিরতি দিন। একটা জীনিস চিন্তা করুন তো আজকে পর্জন্ত বেচে আছেন কার দয়ায়? অব্যশ্যই আল্লাহয় দয়া ও সাহায্য ছাড়া আপনি ১ মহুর্তও বাচতে পারবেন না। সুতরাং আজকে পর্জন্ত যে আল্লাহ আপনাকে আমাকে ভাল রেখেছে সেই আল্লাহ কি আগামিকাল আপনাকে আমাকে ভাল রাখার জন্য যথেষ্ট না? যিনি আপনাকে আমাকে আগামিকাল পর্জন্ত বেচে রাখবেন তিনি কি আমাদের জ্ন্য যথেষ্ট অক্রিজেন ও আমাদের চাহিদা অপুর্ণ রেখে বাচিয়ে রাখবেন। যেটি আমাদের জন্য ভাল সেটি করেই তিনি আমাদের বাচিয়ে রাখবেন।
নতুন কিছু শুরু করুন:
একটি নতুন শখ, নতুন ভাষা শেখা, নতুন কোন দক্ষতা অর্জন – এসব আপনার মনকে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করবে। নতুন যেটি আপনার ভাল লাগে সেটি করতে পারেন সেটি আপনাকে আনন্দ দিবে ও আপনার বর্তমান সময়কে ভালভাবে কাটাতে সাহায্য করবে।
প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিন:
যদি দীর্ঘদিন ধরে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন, তাহলে একজন মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
আমার সাজেশন থাকবে যে, আপনি রাত ৩ টায় ওযু করে, জায়নামাজ বিচিয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ শুরু করে দিয়ে চোখ বন্ধ করে যাস্ট ভাবুন আপনার মালিক আল্লাহ আপনার সামনে দাড়িয়ে আছে আপনি যা বলতে চান আল্লাহকে বলুন। যেভাবে আপনার কষ্টের কথা আপনার মনিবকে আপনি বলতে সেভাবে বলুন। নামাজের সিজদায় গিয়ে ভাবুন আপনি আপনার রবের পায়ে সিজদা দিচ্ছেন। আপনার রবের কাছে আপনার সব চাওয়া সিজদায় বলে ফেলুন। আপনার রব খুব শীঘ্রই আপনার মনকে সুখ শান্তি দিয়ে ভরপুর করে দিবে। তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ না হতেই আপনার হৃদয়টারে সুখময় করে দিবে আমাদের রব আল্লাহ ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখবেন, আপনি একা নন। অনেকেই জীবনের কোন না কোন সময় এই ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন। ধৈর্য ধরুন, নিজের যত্ন নিন এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না।
তাছাড়া নিচের কাজগুলো করতে পারেন।
- প্রকৃতির সাথে সময় কাটান: প্রকৃতিতে হাঁটা, বাগানে কাজ করা, কিংবা শুধু বাইরে বসে থাকাও আপনার মনকে শান্ত করতে এবং আপনাকে আরও ভালো বোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
- কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করুন: প্রতিদিন এমন কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। এটি একটি ছোট জিনিস হতে পারে, যেমন একটি সুস্বাদু খাবার খাওয়া বা একটি সুন্দর দিন উপভোগ করা।
- অন্যদের সাহায্য করুন: অন্যদের সাহায্য করলে আপনার নিজের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এটি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা, দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করা, অথবা কেবল একজন বন্ধুর জন্য কিছু করে দেওয়া হতে পারে।
- মননশীলতা অনুশীলন করুন: মননশীলতা আপনাকে বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগ দিতে এবং আপনার চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিগুলোকে বিচার না করে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ধ্যান, যোগব্যায়াম, বা গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে করা যেতে পারে।
- আপনার পছন্দের কাজ করুন: এমন কিছু করুন যা আপনি উপভোগ করেন এবং যা আপনাকে পূর্ণতা বোধ করে। এটি পড়া, লেখা, গান শোনা, নাচা, বা শিল্প তৈরি করা হতে পারে।
যখন কিছুই ভালো লাগে না, তখন আপনি নিচের কিছু বিষয় চেষ্টা করতে পারেন:
- বিরতি নিন: কখনও কখনও কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নেওয়া এবং নিজের জন্য সময় বের করা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। প্রকৃতিতে ঘুরতে যাওয়া, হাঁটা বা প্রিয় কিছু করার চেষ্টা করতে পারেন।
- মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম করুন: এটি মানসিক শান্তি পেতে এবং নিজের সাথে সংযুক্ত হতে সাহায্য করতে পারে।
- কথা বলুন: বন্ধু বা পরিবারের সাথে কথা বলুন। তাদের সাথে আপনার অনুভূতি শেয়ার করুন। কখনও কখনও অন্যদের সাথে কথা বলা মানসিক অবস্থাকে হালকা করতে পারে।
- নতুন কিছু করুন: নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন বা এমন কিছু করুন যা আগে কখনও করেননি। এটি মনের নতুন দিক উন্মোচন করতে সাহায্য করতে পারে।
- সৃজনশীল হোন: লিখতে, আঁকতে, গান করতে বা অন্য কোনো সৃজনশীল কাজে নিজেকে জড়ান। এটি মনের বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- সাহায্য নিন: যদি মনে হয় যে আপনার অবস্থা উন্নত হচ্ছে না, তবে পেশাদার কাউন্সেলর বা থেরাপিস্টের সাহায্য নেওয়া উচিৎ।
- শারীরিক ব্যায়াম করুন: শরীরচর্চা মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং মানসিক অবস্থার উন্নতি করতে সাহায্য করে।
- সঠিক ঘুম এবং খাদ্য: সঠিক ঘুম এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার জন্য যে পদ্ধতিগুলি কার্যকরী হতে পারে, তা অনুসন্ধান এবং প্রয়োগ করার মাধ্যমে আপনি ধীরে ধীরে উন্নতি অনুভব করতে পারেন।
আপনার যে উপায়টি ভাল লাগে সেটি করতে পারেন। আমার এই লেখাটি যদি আপনার সামান্য উপকারে আসে তাহলে আমার এতক্ষণ ধরে লেখাটি স্বার্থক।
Related Questions
সিনেমা জীবনের মত হয় নাকি,জীবন সিনেমার মতো হয়
জীবনের আসল উদ্দেশ্য কী? কেন বাচা শিখতে হবে
How to enjoy the class
নিজের মনোবল বাড়ানোর শ্রেষ্ঠ উপায়
যেভাবে পরিশ্রম করলে আসবে না ক্লান্তি
কিভাবে ব্রেনকে Reset করবেন: মানসিক পুনরুদ্ধার ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
কেন আবেগে সিদ্ধান্ত নিবেন না || ভেবে চিন্তে ঠান্ডা মাথায় নিবেন
যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না? যোগ্য প্রার্থী পাওয়ার জন্য কি করা উচিত
মানসিক রোগী চেনার উপায়
কিভাবে ১০০০ কোটি টাকার মালিক হবেন